শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৫:৫২ পিএম, ২০২১-০৯-০৫
বন্দর নগরী চট্টগ্রামের রৌফাবাদ পশ্চিম শহীদ নগর এলাকায় শাহ আমানত টাওয়ারে ফ্ল্যাট কিনে চল্লিশটি পরিবার তাদের পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন। কথিত ডেভেলপার কোম্পানীর মালিক আহমদ কবিরের ছোট ভাই মাহবুবুল কবির পুলিশের ওসি হওয়ায় ওসির নাম ভাঙ্গিয়ে চল্লিশ জন ফ্ল্যাট মালিককে জিম্মি করে রেখেছেন বলে শাহ আমানত টাওয়ার এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স এসোসিয়েশন। নয় তলা বিশিষ্ট শাহ আমানত টাওয়ারের এ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের মধ্যে রয়েছেন বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক, ব্যাংকার ও ডাক্তারসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ। কথিত কেপিডিএল বিল্ডার্স লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ কবির একটি ব্যাংকে চাকরী করার সময় তার ছোট ভাই পুলিশের ওসি মাহবুবুল আলমের কালো টাকা সাদা করার লক্ষ্যে ডেভেলপার ব্যবসায় নামেন। ব্যাংকে চাকুরী করার সুবাধে নগরীর বায়েজিদ রৌফাবাদ পশ্চিম শহীদ নগর এলাকার বাসিন্দার জমি ডেভেলপার করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হোন। শাহ আমানত টাওয়ার নামে একটি নয় তলা ভবনের কাজ শুরু করেন আহমদ কবির। আহমদ কবির জামায়াতের সক্রিয় কর্মী হওয়ার সুবাধে কোন ধরনের প্রচার ছাড়াই নীরবে ভবনের ৪০ টি ফ্ল্যাট সহজেই বিক্রি করে নেন। ফ্ল্যাট বিক্রি করার পর এ্যাপার্টমেন্ট ওনারদের সময় মতো ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকেন এই কথিক ডেভেলপার মালিক। তার অবস্থা দেখে অনেকটা নিরুপায় হয়ে এ্যাপার্টমেন্ট মালিকরা অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বিগত ২০১৭ সালের দিকে এ্যাপার্টেেমেন্টর কাজ শেষ করে ভবনের দখল নেন এ্যাপার্টমেন্ট মালিকরা।
ভুক্তভোগী এ্যাপার্টমেন্ট মালিকরা অভিযোগ করে বলেছেন, এ্যাপার্টমেন্ট রেজিষ্ট্রিসহ নানা কাজে ব্যাপক ভাবে হয়রানি করেছেন আহমদ কবির। চুক্তিতে ভবনে লিফট, জেনেরেটরসহ নানা ধরনের সুৃযোগ সুবিধার কথা থাকলেও এসব সুবিধা প্রদান না করেই এ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের এসব সুবিধার টাকা আত্মসাত করেছেন আহমদ কবির।
শাহ আমানত টাওয়ারে মাত্র ৮ টি কার পার্কিং থাকলেও আহমদ কবির ২১ টি পার্কিং বিক্রি করেছেন। প্রতিটি পার্কিং বিক্রি করা হয়েছে তিন লক্ষ টাকা করে। শাহ আমানত টাওয়ারের ভিতর দিয়ে দক্ষিণ পাশে ১৫ ফুট প্রশস্ত একটি রাস্তা দেওয়া হয়েছে ল্যান্ড ওনারকে। এই রাস্তার বিষয়টি এ্যাপার্টমেন্ট ওনারদের কাছে গোপন রেখে তথ্য গোপন করার অপরাধ করেছেন আহমদ কবির এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী এ্যাপার্টমেন্ট ওনারদের। ডেভেলপার মালিক লিফট এবং জেনারেটর স্থাপন না করায় অনেকটা নিরুপায় হয়ে এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স এসোসিয়েশন নিজেদের টাকায় লিফট ও জেনারেটর বসানোর কাজ সম্পন্ন করেছেন পরিবার নিয়ে বসবাসের উপযোগী করার লক্ষ্যে।
শাহ আমানত টাওয়ার এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স এসাসিয়েশন ভবনের ছাদকে সুন্দর করতে বৈঠক খানাসহ ছাদ বাগান তৈরির কাজ শুরু করলে আহমদ কবির স্থানীয় সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে ভবনের ছাদের বৈঠক খানা ও ছাদ বাগান ভেঙ্গে দেয়। এসময় স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দকে শারীরিক ভাবে লাঞ্জিত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা।
চলতি বছরের গত ২৭ জুন আহমদ কবির ভবনের একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নিয়ে এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদককে ভবন থেকে তুলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এসব ভবনের অন্যান্য সদস্যরা এগিয়ে আসলে সাধারণ সম্পাদককে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন সন্ত্রাসীরা। বিষয়টি ওনার্স মালিকরা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কথিত ডেভেলপার কোম্পানীর মালিক লোভী আহমদ কবিরের এহেন অত্যাচারের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় মামলা ও অভিযোগ করার পরও কোন প্রকার সুরাহা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্সগণ। একাধিক ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী এ্যাপার্টমেন্ট মালিকরা থানায় অভিযোগ করলে তাৎক্ষনিক ভাবে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ আর বেশীদূর অগ্রসর হতে পারেন না। সর্বশেষ চলতি বছরের ৩০ জুন স্থানীয় সামাজিক ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একটি সমঝোতা বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে গাড়ীর অতিরিক্ত গাড়ীর পার্কিং বিক্রির ৩৯ লক্ষ টাকা এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্সদের কাছে আহমদ কবির ফেরত দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এই ৩৯ লক্ষ টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য কথিত ডেলেলপার কোম্পানীর মালিক আহমদ কবির নানা ধরনের ছল চাতুরির আশ্রয় হিসাবে প্রতিবাদকারী এ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের বিরুদ্ধে মামলাসহ জুলুম নির্যাতন লাগাতার ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শাহ আমানত ভবনে দুইটি এ্যাপার্টমেন্টে আহমদ কবির ও তার মা বাবা বসবাস করলেও সময় মতো বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল ও গ্যাসসহ বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ পরিশোধ না করেই অনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সার্ভিস চার্জ আদায়ে ওনার্স এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করলে, তাদের শুনতে হয় গালমন্দ। ভোগ করতে হয় নানা ধরনের নির্যাতন। ভবনের নিরাপত্তার জন্য এ্যপার্টমেন্ট এসোসিয়েশন নিজেদের অর্থায়নে পুরো ভবনে সিসিটিভি ক্যামরা বসালেও এসব সিসিটিভি ক্যামরা ভেঙ্গে ফেলে আহমদ কবিরের লোকজন।
ভবনের ছাদ ভবনে বসবাসরত এ্যাপার্টমেন্ট মালিক ও তাদের পরিবার ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও এই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই আহমদ কবির ও তার বাবা ছাদে তালা মেরে দিয়ে ভবনের ছাদ তাদের একক বলে দাবী করে বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়ত। নিয়মিত নানা ধরনের হয়রানি ও লাঞ্জনার শিকার হয়ে এ্যাপার্টমেন্ট মালিকরা সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করে কোন ধরনের প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে কোর্টের আশ্রয় নিচ্ছেন বলে ভুক্তভোগিরা জানিয়েছেন।
কথিত ডেভেলপার কোম্পানীর মালিক আহমদ কবিরের ক্ষমতার উৎস হলো তার ছোট ভাই পুলিশের ওসি মাহবুবুল কবির। ওসি মাহবুবুল কবির বিএনপি তথা চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এসআই হিসাবে পুলিশে নিয়োগ পান শিবির ক্যাডার হিসাবে। পরবর্তীতে ওসি পদে নিয়োগ পান মাহবুবুল কবির। স্থানীয়দের অভিযোগ ওসি মাহবুবুল কবির তার অঢেল কালো টাকা সাদা করতে বড় ভাইকে ব্যাংকের চাকরী ছাড়িয়ে নিয়ে ডেভেলপারের ব্যবসায় নামান। তাদের কথিত কোম্পানীর তৈরি প্রথম ভবন হচ্ছে শাহ আমানত টাওয়ার। এই ভবনের ৪০ জন ফ্ল্যাট মালিককে জিম্মি করে তাদের কোটি কোটি আত্মসাত করে পুরো ভবনের বাসিন্দাদের নরক যন্ত্রনায় রেখেছেন আহমদ কবির ও ওসি মাহবুবুল কবির এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
শাহ আমানত টাওয়ার ডেভেলপার কোম্পানীর মালিক ও কেপিডিএল বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ কবিরের সাথে এই প্রতিবেদক মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি তার বিরুদ্ধে এ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের সকল অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান। তিনি(আহমদ কবির) এ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের কাছে নির্যাতিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলা রুজু করেছেন বলে জানিেেয়েছন।
শাহ আমানত টাওয়ার এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বললে, তারা এই প্রতিবেদককে জানান, প্রায় অর্ধ কোটি টাকা খরচ করে আহমদ কবির থেকে এক একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন এ্যাপার্টমেন্ট মালিকগণ। টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনে প্রতিদিন পরিবার নিয়ে লাঞ্জিত হতে হচ্ছে সন্ত্রাসীদের কাছে। ফ্ল্যাট ক্রয়ের কোন চুক্তিই আহমদ কবির মানেনি। উল্টো এ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের প্রতিদিন তার ভাই পুলিশের দাপট দেখিয়ে হয়রানি করে আসছেন আহমদ কবির। আমাদের(এ্যাপার্টমেন্ট মালিক) টাকায় ইতিমধ্যে কেপিডিএল বিল্ডার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও এই প্রতিষ্ঠান রিহ্যাবের সদস্যপদ পায়নি। তার গঠিত বাহিনীর সদস্যদের ভয়ে আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন এ্যাপার্টমেন্টে বসবাসরত পরিবার গুলো। কথিত ডেভেলপার কোম্পানীর মালিক আহমদ কবির ও তার ভাই ওসি ম্হাবুবুল কবিরের বিরুদ্ধে তদন্তসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন শাহ আমানত টাওয়ার এ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ। এই ধরনের লোভী লোকজন ব্যবসায়ী সেজে ডেভেলপার কোম্পানী গড়ে তোলায় প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সহজ সরল লোকজন এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা।
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি : আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী ফাগুয়া উৎসব উপলক্ষে ২৭/০৩/২০২৪ খ্রিঃ রোজ বুধবার সকা...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : বান্দরবান পার্বত্য জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান এর সভাপতিত্বে জে...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : নৌ পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ বলেছেন, এবারে ঈদের আগে ও পরে মোট ১১ দিন সব ধ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি ছুটির চেয়ে শ্রমিকদের ছুটি কোনোভাবেই কম হওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রত...বিস্তারিত
ষ্টাফ রিপোর্টার : : ২৬ মার্চ- ৫৪ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের দিন , পরাধীনতার শৃঙ্খল ভে...বিস্তারিত
বেঞ্জামিন রফিক : : আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের সংগ্রামমুখর বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited