শিরোনাম
মো. আনিসুজ্জামান, খুলনা : | ০৪:৪২ পিএম, ২০২১-০৫-০৪
এক একটি ভবন তৈরিতে খরচ হয়েছে কোটি টাকার উপরে। এমন ভবনের সংখ্যা দু’টি। চাকচিক্কময় এ ভবন দু’টি খুলনার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ও উপ-পরিচালকের জন্য তৈরি করে গণপূর্ত বিভাগ। ভবন দু’টি তৈরির পর প্রায় দেড় বছর হয়ে গেলো হস্তান্তর করেছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। অথচ এখনও পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়। পাশের ডাক্তার ডরমেটরিতে পরিচালক থাকলেও উপ-পরিচালক আগে থেকেই থাকছেন বাইরের নিজ বাড়িতে।
হাসপাতালের প্রধান দুই কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত(ঊধৎ সধৎশবফ)থাকার পরও কিভাবে ভবন দু’টি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে এমন প্রশ্ন খুলনার সচেতন মহলের। কেউ কেউ বলছেন, এটি রীতিমতো সরকারি বিধি ভংগের শামিল।
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠাণ গণপূর্ত বিভাগ বলছে, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ও উপ-পরিচালকের জন্য নির্দিষ্ট দু’টি ভবন ছাড়াও সেখানে ডাক্তার ও নার্স ডরমেটরী এবং হাসপাতালের মূল ভবনের সম্প্রসারিত অংশ অনেক আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এখন ভবনগুলো ব্যবহার করা না করা কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।
হাসপাতালের তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক ডা, কামরুল হক বলেন, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে ওই দু’টি ভবনসহ অন্যান্য ভবন এবং হাসপাতালের ৫ম তলার সম্প্রসারিত অংশ বুঝে নেন। এরপর তিনি প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব ছেড়ে দিলেও সেই থেকে এখন পর্যন্ত কোন পরিচালক ও উপ-পরিচালক ভবন দু’টি ব্যবহার করেননি। তবে ডাক্তার ও নার্স ডরমেটরীতে অনেকেই বসবাস করছেন।
হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভবন দু’টি হস্তান্তরের পর শুরুতেই পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র গোস্বামী। তিনি যেহেতু আগে থেকেই বাইরে অবস্থান করছিলেন সেহেতু চাকুরি জীবনের শেষে এসে আর ওই ভবনে ওঠেননি। এরপর তিনি অবসরে গেলে সেখানে কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন বর্তমান উপ-পরিচালক ডা. এসএম মোর্শেদ। পরে সেখানে যোগ দেন বর্তমান পরিচালক ডা. মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দার। কিন্তু ডা. মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দারও ওই ভবনে না উঠে পাশের ডাক্তার ডরমেটরীতে ওঠেন। এমনকি ডরমেটরীতে ওঠার জন্য তিনি ফার্ণিচারসহ অন্যান্য আসবাবপত্র কিনে ভাউচার করেন বলে হাসপাতালের হিসাব বিভাগ থেকে জানা যায়। এভাবে ডরমেটরীর জন্য অন্তত ৮/১০ লাখ টাকার মালামাল কেনা হয় হাসপাতালের অর্থে। যেটির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এটি কতটা বিধি সম্মত সে ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিচালক ডা. মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দার কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। এমনকি তাকে মোবাইলে এসএমএস দিয়েও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে উপ-পরিচালক ডা. এসএম মোর্শেদ বলেন, যেহেতু কেবল ভবন দু’টি হস্তান্তর হয়েছে সেহেতু এখনও সেখানে তারা ওঠার চিন্তাভাবনা করছেন না। তাছাড়া তিনি যেহেতু আগে থেকেই নিজ বাড়িতে থাকছেন সেহেতু তার জন্য নির্দিষ্ট ভবনে উঠবেন কি না সে সিদ্ধান্ত এখনও নেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি বলছে, কোন কর্মকর্তার জন্য আবাসিক ভবন নির্দিষ্ট (Ear marked) থাকলে তিনি সেখানে থাকেন বা না থাকেন তার বাসা ভাড়া কর্তন করতে হবে। কিন্তু আবু নাসের হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভবন দু’টি হস্তান্তরের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোন পরিচালক ও উপ-পরিচালকের বাসা ভাড়াই কর্তন করা হয়নি। যেটি সরকারি অর্থ তছরূপের শামিল বলেও অনেকে মনে করেন।
সচেতন নাগরিক সমাজ (সনাক) খুলনার সভাপতি এডভোকেট শামীমা সুলতানা শীলু বলেন, শুধু শেখ আবু নাসের হাসপাতাল নয়, এমনিভাবে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানেই স্বচ্ছতা থাকা উচিত। যার জন্য আবাসিক ভবন নির্দিষ্ট তাকে সেখানে থেকেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার বলেও তিনি মনে করেন। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের যেসব জায়গায় এমন অনিয়ম রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম দূর করতে উদ্যোগ নেয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অপরদিকে, বিগত প্রায় একমাস ধরে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের অটোমেশিন বন্ধ রয়েছে। ফলে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও ম্যানুয়ালি করা হচ্ছে পরীক্ষা-নীরিক্ষা। অটোমেশিন চালাতে যে রি এজেন্টের প্রয়োজন তা না থাকায় মেশিন বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। তবে মেশিনগুলো কেনার পর এই প্রথম রি এজেন্টের অভাবে তা বন্ধ রয়েছে বলেও সূত্রটি উল্লেখ করে।
শেখ আবু নাসের হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মাসের প্রথম দিক থেকে এ হাসপাতালের ডাইমেনশন এক্সপেন্ড প্লান্ট ও অটোসেল কাউন্টার মেশিনটি বন্ধ রয়েছে। ডাইমেনশন এক্সপেন্ড প্লান্টে ঘন্টায় একশ’টি এবং অটোসেল কাউন্টার মেশিনে একবারে পঞ্চাশটি পরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে। এই মিশন দু’টি বন্ধ রয়েছে শুধুমাত্র রি-এজেন্ট বা কেমিকেলের অভাবে।
আর এ মেশিন দু’টি বন্ধের ফলে ফাস্টিং সিরাম গ্লুকোজ, পোষ্টপ্রান্ডিয়াল ব্লাড সুগার, সিরাম গ্লুকোজ, টোট্যাল সিরাম বিলিরুবিন, এসজিপিটি, এসজিওটি, টোট্যাল সিরাম এলবামিন, ব্লাড ইউরিয়া, সিরাম ক্রিয়েটিনিনসহ অন্তত: ২০টি পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। যে পরীক্ষাগুলো এখন মেনুয়ালি করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হচ্ছে।
হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি বলছে, যেসব পরীক্ষা অটো মেশিনে বন্ধ রয়েছে সেসব পরীক্ষা বাইরের কোন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান থেকে করাতে রোগীদের গুণতে হবে ৮শ’ টাকা। যেটি আবু নাসের হাসপাতাল থেকে মাত্র দেড়শ’ টাকায় করানো সম্ভব।
হাসপাতালের কনসালটেন্ট প্যাথলজী ডা. সুকুমার সাহা বলেন, প্যাথলজী বিভাগের জন্য চাহিদাপত্র অনেক আগেই কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া আছে। কর্তৃপক্ষ যখনই যে নির্দেশ দেবেন তখন সেভাবেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অটোমেশিন বন্ধ থাকায় খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন প্রতিদিন যে পরীক্ষা হচ্ছে তাতে ম্যানুয়ালিই করা সম্ভব। তাছাড়া অটোমেশিন বন্ধ থাকায় টেকনিশিয়ানদের একটু কষ্ট হয় ঠিকই কিন্তু পরীক্ষা একেবারে বন্ধ থাকছে না।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. এসএম মোর্শেদ বলেন, অহেতুক অর্থ খরচ করার কোন প্রয়োজন নেই। এজন্য অটোমেশিনের জন্য রি-এজেন্ট কেনা হচ্ছে না। যখন প্রয়োজন হবে তখন কেনা হবে বলেও তিনি জানান। ২/১টি মেশিন বন্ধ থাকলেও কোন পরীক্ষা বন্ধ নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।#
নিজস্ব প্রতিবেদক : রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ডিজিটাল মেশিন কারসাজি করে ওজন কম দেওয়া চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে মহা...বিস্তারিত
কুমিল্লা প্রতিনিধি : : গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। ট্রেনটি চট...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজার সিন্ডিকেট ও মজুতদারির সঙ্গে কারা জড়িত এবং তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো যোগসাজশ আছে কি না সেটি খ...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : বৃহস্পতিবার দেশের পাঁচ বিভাগ এবং দুটি অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : যেখানে কম দামে পণ্য পাওয়া যায় সেখান থেকে পণ্য কিনতে ভোক্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্...বিস্তারিত
কক্সবাজার, প্রতিনিধি : : কক্সবাজারের চকরিয়ায় মোহাম্মদ আব্দুল গাফফার এবং মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নামে দুই ভাইয়ের যোগসাজশে জ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited