শিরোনাম
আমাদের বাংলা ডেস্ক : | ০৫:৫৭ পিএম, ২০২১-১২-০৯
মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা
ইসলাম আগমনের আগে জাহিলিয়াতের অন্ধকার যুগে নারীরা ছিল চরম অবহেলিত, ঘৃণিত। তখন তাদের বেঁচে থাকার অধিকারটুকু পর্যন্ত হরণ করা হতো। কন্যাসন্তানকে জীবিত মাটিতে পুঁতে ফেলার নির্মম ঘটনাও ঘটেছিল সে সময়। ইসলাম এসে এই বর্বরতা রুখে দিয়েছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে আয়াত অবতীর্ণ করে জাহিলি যুগের উগ্র অবিশ্বাসীদের এই বর্বরতার সমালোচনা করে মুসলমানদের নারী অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছেন। কোরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের কাউকে যখন কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখমণ্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। তাকে যে সংবাদ দেওয়া হয়, তার থেকে বাঁচতে সে নিজ সম্প্রদায় থেকে আত্মগোপন করে; সে চিন্তা করে যে হীনতা সত্ত্বেও সে তাকে রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে দেবে। সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত করে, তা কতই না নিকৃষ্ট।’ (সুরা : নাহল, আয়াত ৫৮-৫৯)
শুধু তাই নয়, ইসলামপূর্ব জাহিলি যুগে মানুষ এতটাই নিচে নেমে গিয়েছিল যে তারা তাদের নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করাত। তাদের উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করত। এমনকি স্বীয় উপার্জিত সম্পদে তাদের মালিকানা ছিল না, উপার্জন করে আনলেও স্বামীরা লুট করে নিত। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে আয়াত নাজিল করে তাদের সম্পদের অধিকারও নিশ্চিত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত।’ (সুরা : নিসা, আয়াত ৩২)
ইসলাম নারীদের অধিকারকে এতটাই গুরুত্ব দেয় যে ইসলামের ইতিহাসে নারীর সম্ভ্রম রক্ষায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার ইতিহাস পাওয়া যায়। যে যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল ‘বনু কাইনুকা’ নামের একটি গোত্রের সঙ্গে।
বনু কাইনুকা ছিল ইহুদিদের তিনটি গোত্রের মধ্যে সর্বাধিক হিংসুটে একটি গোত্র। তারা সবাই মদিনায় অবস্থান করত এবং তাদের মহল্লাটি তাদের নামেই কথিত ছিল। পেশার দিকে থেকে তারা ছিল স্বর্ণকার, কর্মকার ও পাত্র নির্মাতা।
আবু আওন থেকে ইবনে হিশাম বর্ণনা করেছেন, একদিন জনৈকা মুসলিম নারী বনুু কাইনুকা গোত্রের বাজারে দুধ বিক্রি করে বিশেষ কোনো প্রয়োজনে এক ইহুদি স্বর্ণকারের কাছে গিয়ে বসে পড়েন। কয়েকজন দুর্বৃত্ত ইহুদি তাঁর মুখের নেকাব খোলানোর অপচেষ্টা করে, তাতে ওই নারী অস্বীকৃতি জানান। ওই স্বর্ণকার গোপনে মুসলিম নারীটির (অগোচরে) পরিহিত বস্ত্রের এক প্রান্ত তার পিঠের ওপরে গিঁট দিয়ে দেয়, তিনি তা বুঝতেই পারলেন না। ফলে তিনি উঠতে গিয়ে বিবস্ত্র হয়ে পড়েন। এ ভদ্র মহিলাকে বিবস্ত্র অবস্থায় প্রত্যক্ষ করে নরপিশাচের দল হো হো করে হাততালি দিতে থাকল। মহিলাটি ক্ষোভে ও লজ্জায় মৃতপ্রায় হয়ে আর্তনাদ করতে লাগলেন। তা শুনে জনৈক (প্রতিবাদী) মুসলিম ওই স্বর্ণকারকে আক্রমণ করে হত্যা করেন। প্রত্যুত্তরে ইহুদিরা মুসলিম লোকটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে হত্যা করে।
এরপর নিহত মুসলিমটির পরিবারবর্গ চিৎকার করে ইহুদিদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের কাছে ফরিয়াদ করেন। এর ফলে মুসলিম ও বনু কাইনুকার ইহুদিদের মধ্যে সংঘাত বাধে।
এ ঘটনার পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল (তিনি এর আগে তাদের অনেক অপরাধ ক্ষমা করেছিলেন)। তিনি মদিনার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব আবু লুবাবাহ ইবনে আবদুল মুনজির (রা.)-এর ওপর অর্পণ করে স্বয়ং হামজাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রা.)-এর হাতে মুসলিমদের পতাকা প্রদান করে আল্লাহর সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বনু কাইনুকা গোত্রের দিকে ধাবিত হন। ইহুদিরা তাঁদের দেখামাত্র দুর্গের মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করে দুর্গের দ্বারগুলো ভালোভাবে বন্ধ করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) কঠিনভাবে তাদের দুর্গ অবরোধ করেন। এই দিনটি ছিল শুক্রবার, হিজরি দ্বিতীয় সনের শাওয়াল মাসের ১৫ তারিখ। ১৫ দিন পর্যন্ত অর্থাৎ জুলকাদার নতুন চাঁদ উদয় হওয়া অবধি অবরোধ অব্যাহত থাকে। তারপর আল্লাহ তাআলা ইহুদিদের অন্তরে ভীতি ও সন্ত্রস্তভাব সৃষ্টি করলেন এবং তাঁর নীতি এটাই যে, যখন তিনি কোনো সম্প্রদায়কে পরাজিত ও লাঞ্ছিত করার ইচ্ছা করেন তখন তিনি তাদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করে থাকেন। অবশেষে বনু কাইনুকা গোত্র আত্মসমর্পণ করল এবং বলল যে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের জান-মাল, সন্তান-সন্ততি এবং নারীদের ব্যাপারে যা ফায়সালা করবেন তারা তা মেনে নেবে। তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশক্রমে তাদের সবাইকে বন্দি করে নেওয়া হয়। (ইবনে হিশাম : ২/৪৭, আর রাহিকুল মাখতুম [বাংলা] : ২৪০-২৪২)
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : সেনবাগ (নোয়াখালী ) সংবাদদাতা নোয়াখালী জেলার সেনবাগে নির্মিত হয়েছে অত্যাধুনিক সৌন্দর্যমন্ডিত ...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫২৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। হজযাত্রী বহনকারী ...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : সৌদিআরব প্রতিনিধি: সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা মুকারমায় অবস্থিত মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র ইবাদতস্থ...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : আমাদের বাংলা নিউজ ডেস্কঃএশার নামাজের পর মসজিদে মসজিদে ছিল পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত নি...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : আমাদের বাংলা ডেস্কঃমুসলমানদের জন্য সালাত বা নামাজ সুনির্দিষ্ট ফরজ ইবাদত ও ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : আমাদের বাংলা ডেস্কঃরহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। বছরের সেরা মাস এটি। এ মাসের অসংখ্য ফ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited