শিরোনাম
কক্সবাজার, প্রতিনিধি : | ০১:৩৭ পিএম, ২০২৩-১২-৩১
এবারের ইংরেজি বছরের শেষ দিন বা থার্টিফার্স্ট নাইটেও দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে পর্যটকদের সাড়া নেই। সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চ, হোটেল, মোটেল এবং ইনডোরেও কনসার্ট বা বিনোদনমূলক কোনো আয়োজন থাকছে না। বেশিরভাগ হোটেল- মোটেলের তিনভাগের দুইভাগ কক্ষ ফাঁকা রয়েছে। কিছু কিছু হোটেলে বুকিং থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে।
এবারের থার্টিফার্স্ট নাইট পড়েছে রোববার। সরকারি ছুটি নেই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসনের কড়াকড়ি, আবার আউডডোর-ইনডোর কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজন না থাকায় এবার পর্যটকদের সাড়া নেই এমনটাই বলছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
অথচ অন্যান্য বছর এই দিনে লাখো পর্যটকের সমাগম হতো। এখানকার প্রায় ৩৮০ হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউসে কক্ষ না পেয়ে ফুটপাতে রাত্রিযাপনের উপক্রম হতো, কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন।
কক্সবাজার হোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, নির্বাচন নিয়ে মানুষ ব্যস্ত সময় পার করছেন, আবার মনে আতঙ্কও আছে। এছাড়া এখনও পর্যন্ত স্কুলগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম চলমান, সবমিলিয়ে এবার থার্টিফার্স্ট নাইটে পর্যটকদের সাড়া নেই।
অথচ গত বছর এই দিনে হোটেল মোটেলগুলোতে কোনো কক্ষ ফাঁকা ছিল না কিন্তু এ বছর তিনভাগের দুইভাগ কক্ষই ফাঁকা।
নির্বাচনের কারণে উন্মুক্ত মঞ্চে কনসার্ট আয়োজনে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু পর্যটক নেই, সে কারণে পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতে ইনডোর কোনো আয়োজনও এবার হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারে পর্যটকদের আবাসনের জন্য রয়েছে ৩৮০টি হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ ও কটেজ। যেখানে প্রায় এক লাখ পর্যটকের রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে।
শহরের পাঁচ তারকা হোটেল কক্সটুডের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আবু তালেব শাহ বলেন, নানা কারণে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। অন্যান্য বছর রুমের জন্য হাহাকার তৈরি হলেও এবার থার্টিফার্স্ট উপলক্ষে ৩৫ ভাগ বুকিং আছে মাত্র।
নির্বাচনের কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো বুকিংই নেই।
কলাতলীর হোটেল সী উত্তরার সিইও মো. ওসমান গণি জানান, সংসদ নির্বাচন, ছেলে মেয়েদের ভর্তি, উন্মুক্ত মঞ্চে কনসার্ট আয়োজনে নিষেধাজ্ঞাসহ নানা কারণে এবার থার্টিফার্স্ট নাইটে কক্সবাজারে পর্যটক আসছে না। যে কারণে প্রায় প্রতিটি হোটেল-মোটেল ফাঁকা।
তিনি বলেন, এ হোটেলে ৬০ কক্ষের মধ্যে ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য ৭টি কক্ষ বুকিং ছিল, তাও বাতিল করা হয়েছে।
শহরের হোটেল মোটেল জোনের সী ভিউ হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) এ প্রতিবেদককে জানান, এ হোটেলে মোট ৬০টি কক্ষ আছে। এর মধ্যে ওই দিনের জন্য বুকিং আছে মাত্র তিনটি। এছাড়াও এর আগে গত কয়েকদিনে প্রতি দিন ২০ থেকে ২৫টি কক্ষ বুকিং ছিল বলে জানান তিনি।
হোটেল মালিকরা জানান, গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে টানা দেড় মাস পর্যটকশূন্য ছিল কক্সবাজার। এ কারণে শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের অধিকাংশ কক্ষ খালি পড়ে ছিল। তবে বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের ছুটিতে ব্যবসা কিছুটা চাঙা হলেও পরে আবার পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে সমুদ্র সৈকত।
ভিড় নেই সৈকতে
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, সিগাল, লাবনী পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, কোনোখানেই পর্যটকের তেমন ভিড় নেই। প্রতিদিনের মতো কিছু পর্যটক সেলফি, বালিয়াড়িতে দৌড়ঝাঁপ ও সমুদ্রে স্নান করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে সৈকতে ভিড় কম থাকাতে আনন্দ বেশি হচ্ছে বলে জানালেন দিনাজপুর থেকে আসা নব দম্পতি মিরাজ আহম্মেদ ও সুষ্মিতা আহম্মেদ।
সুষ্মিতা বলেন, আমি সব সময় কোলাহল কম পছন্দ করি। যে কারণে এই সময়টা খুব ভালো লাগছে। বিয়ের আগেও কক্সবাজার দুইবার আসা হয়েছে জানিয়ে সুষ্মিতা বলেন, এবার অসাধারণ সময় পার করছি। যেহেতু বিয়ের পর বরের সঙ্গে এসেছি একটু অন্য রকম ভালোলাগা তো আছেই।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে কক্সবাজার ভ্রমণে আসে নবম শ্রেণির ছাত্রী রাবেয়া খানম। সে বলে, আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল কক্সবাজার সৈকতে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করবো। বার্ষিক পরীক্ষা শেষ, পড়ালেখার চাপ নেই। এবার বাবা-মায়ের সঙ্গে এখানে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করবো। এখানকার পরিবেশও অসাধারণ। সবমিলিয়ে অনেক ভালো লাগছে।
সৈকতে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিচকর্মী মো. বেলাল হোসেন জানান, অন্যান্য বছর আগের দিন থেকে সৈকতে পর্যটকের ভিড় শুরু হয়। দায়িত্ব পালনে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু এবারে সেই চাপ নেই। সৈকতের কোনো পয়েন্টে নেই পর্যটক।
থার্টিফার্স্ট নাইটে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট বা অনুষ্ঠানের আয়োজন বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার আগে উন্মুক্ত স্থানের সব আয়োজন শেষ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে হোটেল-মোটেলের ইনডোর আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে এই সময়ের পর আতশবাজি, পটকা ফাটানো যাবে না। এমনকি হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন স্থানের বারও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, নানা কারণে এবার একটু পর্যটক সমাগম কম হচ্ছে। তবে কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকরা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়, যেমন হোটেলে বাড়তি কক্ষ ভাড়া ও খাবারের অতিরিক্ত দাম নিতে না পারে তা দেখভাল করতে একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছেন।
সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযোগকেন্দ্র খোলা হয়েছে। হয়রানির শিকার পর্যটকরা সেখানে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, আমাদের কাছে পর্যটকদের নিরাপত্তাই প্রধান। ভ্রমণে এসে কোনো পর্যটক যেন হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : : ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলায় নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার হোমনা থানা এলাকার বাঘা শরীফ বলী। বৃহ...বিস্তারিত
চট্টগ্রাম ব্যুরো : : বাস-মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক...বিস্তারিত
সংবাদদাতা, রাজশাহী : রাজশাহীতে পদ্মায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ তিন কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। ...বিস্তারিত
বান্দরবান প্রতিনিধি : : বান্দরবানের রুমায় অস্ত্র লুটের ঘটনায় কুকি-চিন সদস্য সন্দেহে গ্রেফতার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিস...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সাতজন চেয়ারম্যান, ৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান, ১০ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : যৌথ অভিযানের কারণে বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার (...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited