শিরোনাম
আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট :: | ০৮:৫৫ পিএম, ২০২০-০৯-১৯
আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ::
সিলেটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত জেলা ও মহানগর কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। দুটি ইউনিটেই সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দেয়া কমিটিতে কারা আছেন কিংবা কারা বাদ পড়েছেন এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। প্রস্তাবিত কমিটিতে আগের কমিটির অনেকেই বাদ পড়ায়
ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে
কমিটি নিয়ে। জেলা কমিটির
সাবেক সহ-সভাপতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদসহ দুই কমিটিতে
পদ প্রত্যাশী প্রভাবশালী অনেকেই বাদ পড়েছেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন কমিটিতে দলের বহুদিনের ত্যাগি নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। আর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রকে
অনুসরণ করে জুনিয়র সিনিয়রিটির আলোকে জেলায় ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাদ পড়াদের
যারা পদ পদবীর প্রত্যাশা করেন তাদেরকে ধৈর্য ধারণের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সময় হলে তারাও সঠিক পদে
পদায়ন হবেন। জেলা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি
মন্ত্রী ইমরান আহমদ জাতীয় পরিষদে স্হান পাচ্ছেন।তাই তাঁকে জেলায় রাখা হয়নি বলে তিনি জানান।
এদিকে কেন্দ্রের কাছে কমিটি জমা হওয়ার পর বেড়ে গেছে পদপ্রত্যাশীদের টেনশন। কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদ পদবী পাওয়া নিয়ে অনেকেই রয়েছেন শঙ্কায়। এরই মধ্যে জানা গেছে মহানগর কমিটিতে
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাবেক নেতৃবৃন্দ বাদ পড়েছেন।আর এতে আওয়ামী লীগ পরিবারের বাইরের লোকজন
স্হান পেয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে মহানগরে
সাবেক কমিটির বাদ পড়া নেতৃবৃন্দের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
কমিটিতে যোগ্য পদ না পাওয়া ও বাদ দেয়ার অভিযোগ এনে দুটি ইউনিটেই ‘বিকল্প কমিটি’ জমা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। কমিটি নিয়ে এধরণের পরিস্থিতিতে বিব্রত আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। সাবেক সহ-সভাপতিদের মধ্য থেকে কেউ প্রথম সহ -সভাপতি হচ্ছেন, না নতুন কেউ এ পদে আসীন হচ্ছেন- নেতা-কর্মীদের কাছে এখন গোলকধাঁধার মতো ঘুরছে সেই প্রশ্ন। তবে জানা গেছে, জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী কিংবা এম পি মাহমুদুস সামাদ চৌধুরীর মধ্য থেকে একজন প্রথম সহ-সভাপতি হতে পারেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় বিভিন্ন সুত্র জানিয়েছে, বয়সের ভারে ন্যুজ্ব কয়েকজন নেতাকর্মী ছাড়াও নানা অভিযোগের কারণে কিছু সক্রিয় নেতাদেরও বাদ দেয়া হয়েছে এবারের কমিটি থেকে। ফলে বাদ যাওয়া নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কেন্দ্রে আরেকটি বিকল্প কমিটি জমা দিতে যাচ্ছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের বাদ পড়াকে মানতে পারছেন তাদের অনুসারীরা। বিশেষ করে জেলা আওয়ামী লীগের ছয় বারের নির্বাচিত এমপি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের বাদ পড়ায় সিলেট-৪ আসনের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তারা ইমরান আহমদের কাছ থেকে কোন প্রকার ইঙ্গিত না পাওয়ায় প্রকাশ্যে কোন প্রতিক্রিয়াও দেখাচ্ছেন না। শেষ পর্যন্ত ইমরান আহমদ জাতীয় পরিষদে গুরুত্বপূর্ণ পদ না পেলে অসন্তোষ দেখা দিতে পারে এমন কানাঘুষাও চলছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এ ছাড়া কমিটিতে সাবেক কমিটির কয়েকজন সম্পাদকের নাম বাদ পড়ার খবরেও নেতা-কর্মীদের মাঝে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।
তবে দলের অনেক নেতাকর্মী শেষ মুহুর্তের চমকের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রস্তাবিত জেলা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন এডভোকেট শেখ মখলু মিয়া, এডভোকেট ময়নুল হক, অধ্যক্ষ শামসুল হকসহ কয়েকজন নেতা।
জেলার তুলনায় মহানগর ইউনিটে বাদ পড়ার সংখ্যা কিছুটা বেশী। মহানগরের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন সিরাজুল ইসলাম, সিরাজ বক্স, মফুর আলী, তুহিন কুমার দাস, তপন মিত্র, জগদীশ দাস, এডভোকেট শামসুল ইসলাম, ফাহিম আনোয়ার চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন রানা, রাধিকা রঞ্জন হোম চৌধুরী, শাহানারা বেগম, প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী, মিছবাউল ইসলাম সুইট, আবরার আহমদসহ আরো কয়েকজন সদস্য।
রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেও প্রস্তাবিত কমিটি থেকে বাদ পড়ায় তপন মিত্র, জগদীশ দাস, এডভোকেট শামসুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তারা কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় এসব নেতৃবৃন্দের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। কমিটিতে বাদ দেয়ার অভিযোগ এনে দুটি ইউনিটেই ‘বিকল্প কমিটি’ জমা দেয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় দফতরে।সেই সাথে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ ।
কমিটি নিয়ে এ ধরণের পরিস্থিতিতে বিব্রত আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা।
তবে জেলা ও মহানগর কমিটির নীতি নির্ধারকরা বলছেন, সময়ের আলোকে
স্বাভাবিক অবস্থায়ই নতুন কমিটি করা হয়েছে।
জানা গেছে, জেলা ও মহানগরে বিগত কমিটির প্রায় দুই ডজন নেতাকে নতুন কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ জানান, কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগ করে আসা স্বচ্ছ ইমেজের নেতাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিব খান বলেন, জেলার নতুন কমিটি নিয়ে কোনো অসন্তোষ নেই। দলের গনতান্ত্রিক নিয়মে
৭৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা পদ পাননি তাদেরকে আগামীদিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। আমরাও এভাবে উঠে এসেছি।
মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে বাদ পড়া ও গত কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী বলেন,
আমার মতো ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। আমরা এতে নিদারুণ অসন্তুষ্ট। বিকল্প কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়া হতে পারে।
জেলা কমিটিতে প্রস্তাবিত দপ্তর সম্পাদক, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি জগলু চৌধুরী বলেন, যোগ্য নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি।
গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হন এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। আর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক হন অধ্যাপক জাকির হোসেন। একই সময় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ পেলে সিলেট আওয়ামী লীগে চমক সৃষ্টি হয়।নাদেল সে সময় কাউন্সিলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন।কিন্তু সৌভাগ্যের বরপুত্র নাদেল এক লাফে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হলে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে চমক দেখা দেয়।
ঠিক একইভাবে মহানগর কমিটিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হয়।জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও জেলার সভাপতি পদ প্রত্যাশী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ মহানগর সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।আর মহানগরে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন অধ্যাপক জাকির হোসেন।
তবে জেলায় সেই কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,প্রবীন ব্যক্তিত্ব এডভোকেট লুৎফুর রহমান সভাপতি হন।আর
সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সেই কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতা এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান।
কিন্তু মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান আর করোনা পরিস্থিতির কারণে আটকে যায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া। তবে এক সপ্তাহ আগে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে সিলেটসহ পূর্ণাঙ্গ না হওয়া সকল ইউনিটের কমিটি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এমন নির্দেশনার পর কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ চার নেতা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কমিটি জমা দেন তারা।
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : সেনবাগ সংবাদদাতা : নোয়াখালীর সেনবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে। &...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং মালিক, শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধার...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : # দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও জনবল সংকটে বকেয়া থাকছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব # রিটার্ন না দেওয়ার জন্য অনেকে ব্...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবিসহ দলে স্বেচ্ছাচারিতার অফিযোগে দলটির চেয়ারম্যান জি...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিরোধী দলে ছিলেন এবং বিরোধী দলেই থাকতে চান বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও রংপুর সদর-৩ আস...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। ম...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited