শিরোনাম
চৌধুরী মনি :: | ০৫:২২ পিএম, ২০২১-০৮-১৪
ইয়াবা পাচারকারীরা ইয়াবা পাচারে প্রশাসনের নজরদারি ফাঁকি দিতে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বল করছে। মানুষের হাতে নয়, ব্যাগে নয়, মুখে গিলে পেটের ভিতরে করেও ইয়াবা পাচার করছে মাদক পাচাকারী সিন্ডিকেট। প্রশাসনের নজরদারী ঠেকাতে ইয়াবা পাচারকারীরা এখন নতুন কৌশল হিসাবে গরুর মুখ দিয়ে অভিনব কায়দায় ইয়াবা ঢুকিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরু দিয়েই পাচার করছে ইয়াবা এমন অভিযোগ উঠেছে। বানের পানির স্্েরাতের মতো আসা ইয়াবা পাচার ঠেকাতে রীতিমতো প্রশাসন রাত দিন সমানে সড়ক ও নৌপথে অভিযান জোরদার করেছে। তারপরও থেমে নেই ইয়াবা পাচার। দেশজুড়ে বেড়েছে ইয়াবা সেবনকারীদের সংখ্যাও। উঠতি বয়সী তরুন- তরুনী ও যুবক যুবতিদের নিয়ে চরম টেনশনে দিনাতিপাত করছেন অভিভাবকরা। মরণনেশা ইয়াবার থাবায় দেশের অভিজাত অসংখ্য পরিবারের সম্ভাবনাময়ী সন্তানরা ইতিমধ্যে অন্ধকারে ডুবে গেছে এমন অভিযোগ উঠেছে। একই রুট দিয়ে আবারো আসা শুরু হয়েছে আইস(ক্রিস্টাল মেথ)। সব রকম মাদকের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে দেশের প্রতিটি অঞ্চল। মরণ নেশা ইয়াবা যে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে আসছে, সেই দেশের সীমান্ত দিয়েই আসছে আইস এমন অভিযোগ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের। আইস পাচারকারী সদস্যদের বেশ কয়ে কয়েকজন ইতিমধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের হাতে ধরা পড়লেও মূল হোতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে। বিশ^ব্যাপী মারাত্মক মাদক হিসাবে পরিচিত আইস চট্টগ্রাম ও ঢাকার অভিজাত সেবনকারীরা সেবন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামে প্রথম আইস ধরা পড়েছে চলতি বছরের গত ২৪ ফেব্রুয়ারী। র্যাব ৭ এর অভিযানে দুইজন পাচারকারীকেসহ ১৪০ গ্রাম আইস উদ্ধার করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১০ আগষ্ট রাতে লালদীঘি এলাকা থেকে ৪৩০ গ্রাম আইসসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। একই ভাবে ঢাকার অভিজাত এলাকা বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের হাতে আইসসহ বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। পরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের গোয়েন্দা তৎপরতায় বেরিয়ে আসে অভিজাত এলাকায় অনেকে নিয়মিত আইস সেবন করার বিষয়টি। মানবদেহের জন্য অতিরিক্ত ক্ষতিকর আইস নিয়ে প্রশাসনের উচ্চ মহলে টেনশন। ফলে মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নজরদারি কঠোর হতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের চলচিত্র শিল্পী ও কথিত মডেলের বাসায় অভিযানে গিয়ে ধরা পড়ে আইসসহ নানা ধরনের মাদক। রীতিমতো অনেকের বাসা বাড়ীতে বসানো হয়েছে মিনি মদের বার। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইয়াবায় এমফিটামিন থাকে পাঁচ ভাগ। আর আইসের পুরোটাই এমফিটামিন। ফলে আইস ইয়াবার চেয়ে অনেকগুণ বেশী ক্ষতিকর। একই সাথে অনেক বেশী প্রতিক্রিয়া তৈরি করে মাদবদেহে। মানবদেহে অতি অল্প সময়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে আইস। এটি সেবনে মস্তিস্কের রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং এর সেবনে রক্তক্ষরণ হতে পারে। আইস সেবনে দ্রুত সময়ে স্মৃতি শক্তি লোপ পেতে পারে বলেও আশংকা করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্রিস্টাল মেথে শতভাগ এমফিটামিন থাকায় এটি বিশ^জুড়ে ভয়ঙ্কর মাদক হিসাবে পরিচিত। সূত্র জানিয়েছেন, ১৮৮৭ সালে জার্মানিতে মারাত্মক সব ড্রাগের উপর গবেষনা করতে গিয়ে আবিস্কৃত হয় ক্রিস্টাল ড্রাগ। ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিস্টাল মেথ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ২০১০ সালের দিকে অষ্ট্রিলিয়া থেকে সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া, লাওস, চীন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশে মাদকটির ব্যবহার শুরু হয়। সূত্র জানায়, ক্রিস্টাল মেথ উচ্চমাত্রার একটি মাদক। এটি সেবনে অনিদ্রা ও অতি উত্তেজনা তৈরি হয় মানবদেহে। এর সেবনে স্মৃতিভ্রম ও মস্কিস্ক বিকৃতি, ষ্ট্রোক,, লিভার ও কিডনি নষ্ট হয়। এই ভয়াবহ মাদকটি উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের শীর্ষ স্থানীয় মাদক ব্যবসায়িরা। উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়ের যৌন আকাঙ্খা বাড়ানোর জন্য আইস সেবনের প্রতি আগ্রহী করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঢাকার বনানী, গুলশান, বারিধারা, মিরপুর, উত্তরা, বনশ্রীসহ সব অভিজাত এলাকায় আইস ও ইয়াবা সেবনকারীর সংখ্যা বেড়েছে। এই এলাকায় বসবাসকারী অভিভাবকদের মধ্যে তাদের প্রিয় সন্তানদের নিয়ে বেড়েছে নানা ধরনের টেনশন। আইস- ইয়াবার ছোবলে ল-ভ- হয়ে পড়ছে অভিজাত ও উচ্চবিত্ত অনেক পরিবার। ইয়াবা ও আইস ঠেকাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোমর বেঁধে নেমেছেন দেশজুড়ে। সূত্র জানিয়েছেন, কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে গত এক যুগের অধিক সময় ধরে বানের পানির মতো করে আসছে ইয়াবা। একই ভাবে পাশ^বর্তী দেশ ভারতের কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে অবাধে ঢুকছে ফেন্সিডিল। ইয়াবা পাচার দেশজুড়ে বাড়তে থাকায় দামী মাদক ফেন্সিডিলের বাজারে কিছুটা ভাটার টান ধরেছে। মানবদেহে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী ইয়াবা কম দামে পাওয়া যাওয়ায় সেবনকারীদের মধ্যে ফেন্সিডিলের বিকল্প মাদক হিসাবে ইয়াবার কদর বাড়তে থাকে। ফলে মাত্র এক যুগের মধ্যেই ইয়াবার বিশাল বাজারে পরিণত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। তার সাথে কম বেশী বেচাকেনা হচ্ছে হেরোইন, আফিম, গাজাসহ নানা ধরনের মাদক। দেশের শীর্ষ স্থানীয় মাদক ব্যবসায়িদের সাথে জড়িয়ে পড়েছে মাঠ পর্যায়ের কতিপয় অনেক পুলিশ কর্মকর্তা. কতিপয় হলুদ সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। নিরাপদে ইয়াবা পাচার করে রাতারাতি অনেকে কোটিপতি বনে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাদক পাচারের সাথে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঠ পর্যায়ের কতিপয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা এমন অভিযোগ উঠেছে। ইয়াবা পাচার শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের তৎপরতায় নৌপথে ও সড়ক পথের অভিযানে লক্ষ লক্ষ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান জোরদার হওয়ায় পাচারকারীরা ইয়াবা পাচারে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করতে থাকে। এই কৌশলের অংশ হিসাবে টেপ দিয়ে ইয়াবা মুড়িয়ে মুখে গিলে পেটে করে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে পাচারকারীরা পায়ুপথে বের করে ক্রেতার কাছে বুৃঝিয়ে দিয়ে আসছে। এই অভিনব কৌশল প্রশাসন জেনে যাওয়ায় নতুন কৌশলে নেমেছে ইয়াবা পাচারকারীরা। বাজার থেকে গরু কিনে ইয়াবা টেপ দিয়ে মুড়িয়ে গরুর মুখ দিয়ে পেট ভর্তি করে গরু পাচারকারীদের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। গরুটি নিরাপদে পৌঁছে যাওয়ার পর মাদক ব্যবসায়িরা গোপন স্থানে গরু জবাই করে গরুর পেট থেকে সহজেই ইয়াবা বের করে সেবনকারীদের চাহিদা মতো পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা, পটিয়া, চন্দনাইশ, রাঙ্গুনিয়া, কর্ণফুলী, মিরসরাইসহ বিভিন্ন এলাকার গরু বেপারিরা এই অভিনব কৌশলে মাদক পাচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব এলাকার অসংখ্য গরু বেপারি রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন এই অভিনব কৌশল নিয়ে এমন অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। গরুর পেটে করে ইয়াবা পাচারের বিষয়টি এখনো খোলামেলা না হওয়ায় এই নিরাপদ কৌশলটি ব্যবহার করছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়িরা। যোগাযোগ ব্যবস্থার অনুকুলে না আসা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ঢুকছে ভয়ঙ্কর মাদক। ফলে সীমান্তে থাকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের আন্তরিকতা থাকার পরও মাদক পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না।
নিজস্ব প্রতিবেদক : রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ডিজিটাল মেশিন কারসাজি করে ওজন কম দেওয়া চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে মহা...বিস্তারিত
কুমিল্লা প্রতিনিধি : : গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। ট্রেনটি চট...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজার সিন্ডিকেট ও মজুতদারির সঙ্গে কারা জড়িত এবং তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো যোগসাজশ আছে কি না সেটি খ...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : বৃহস্পতিবার দেশের পাঁচ বিভাগ এবং দুটি অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : যেখানে কম দামে পণ্য পাওয়া যায় সেখান থেকে পণ্য কিনতে ভোক্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্...বিস্তারিত
কক্সবাজার, প্রতিনিধি : : কক্সবাজারের চকরিয়ায় মোহাম্মদ আব্দুল গাফফার এবং মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নামে দুই ভাইয়ের যোগসাজশে জ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited