শিরোনাম
চৌধুরী মনি :: | ০৩:২১ পিএম, ২০২০-১১-২৪
কর্ণফুলী ও হালদা নদীকে দূষণ থেকে রক্ষার জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা(স্যুয়েরেজ সিস্টেম) প্রকল্প নামে একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প ফেইজ-১ এর দরপত্র আহবান করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক নিয়োগসহ সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের জন্য টেন্ডার নোটিশ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ছাপানো হয়েছে। আগামী ২০২১ সালের ৫ জানূয়ারী টেন্ডারের দরপত্র জমা প্রদানের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর পরের দিন ৬ জানুয়ারী সকল প্রকার বিধি মেনে খোলা হবে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ জানান, সুপেয় পানির জন্য চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী ও হালদা নদীকে দূষণ থেকে রক্ষার কোন বিকল্প নেই। বন্দর নগরী চট্টগ্রামের প্রাণ কর্ণফুলী নদী ও হালদা নদীকে দূষণ থেকে বাঁচাতেই এই উদ্যোগ। এছাড়া নগরীর খাল সমূহ, নালা সমূহ দূষণ থেকে বাঁচাতে চট্টগ্রাম ওয়াসা পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নামে এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। বিদেশী কোন সংস্থার সাহায্য ছাড়াই বাংলাদেশ সরকার জিওবি ফান্ড দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কর্ণফুলী ও হালদা যেমনি দূষণ থেকে বাঁচবে, ঠিক তেমনি দূষণ থেকে কিছুটা বাঁচবে প্রাচ্যেররানী
খ্যাত বন্দর নগরী চট্টগ্রামও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৫৬ বছর ধরে কার্যক্রমে প্রধানত সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধ ছিল। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ব্যবস্থার মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগরবাসী যাতে উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে মহানগরীকে ঘিরে প্রথম বারের মতো পয়ঃনিস্কাশন সেবাও চালু করতে যাচ্ছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
নগরীতে স্বাভাবিক পানি ছাড়াও খাল, নালা ও নদী দূষণ করে এমন তরল বর্জ্য নিঃসৃত হয় প্রতিদিন নগরবাসীর বাসা বাড়ী থেকে। বাসাবাড়ীর রান্নাঘর ও ওয়াশ রুম হতে নিঃসৃত পানি এবং টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক হতে নির্গত পানি সরাসরি রাস্তার পাশের নালায় প্রবাহিত হচ্ছে।
বাস্তবায়িত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার মাধ্যমে নালায় প্রবাহিত দুই ধরনের তরল বর্জ্য প্রবাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা। নালার পরিবর্তে বর্জ্য সরাসরি রাস্তায় স্থাপিত পাইপের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে পয়ঃািনস্কাশন প্রকল্পের পরিশোধন প্ল্যান্টে পাঠিয়ে দেয়া হবে। পরিশোধ]ন প্ল্যান্টে যথাযতভাবে পরিশোধনের পর তা আবার পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হবে। এই ব্যবস্থায় যুক্ত বসতবাড়ীতে আর কোন সেপটিক ট্যাংক ব্যবহার বা নির্মাণের প্রয়োজন হবে না। শুধুমাত্র বাড়ীর ছাদ থেকে নির্গত বৃষ্টির পানি(রেইন ওয়াটার) পাইপের মাধ্যমে সরাসরি রাস্তার পাশের নালায় প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ থাকবে। বৃষ্টির পানি ব্যতিত বাসাবাড়ীর নিঃসৃত সকল তরল বর্জ্য পাইপ সংযোগের মাধ্যমে পরিশোধন প্ল্যান্টে নিয়ে পরিশোধন করায় হলো পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা।
সূত্র জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম শহরকে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার আওতায় আনার
লক্ষ্যে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসা একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছেন। উক্ত মাস্টার প্ল্যানে পুরো শহরকে ছয়টি ক্যাচমেন্ট এলাকায় ভাগ করে প্রতি জোনের জন্য একটি পয়ঃশোধনাগার(এসটিপি) নির্মাণ এবং পুরো শহরের জন্য দুইটি ফিক্যাল স্লাজ শোধনাগার স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।
মাস্টার প্ল্যানের সুপারিশ অনুসারে চট্টগ্রাম ওয়াসার একশত শতাংশ পরিবেশ বান্ধব স্যানিটেশন ব্যবস্থার উদ্যোগের অংশ হিসাবে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্প(প্রথম পর্যায়) ফেইজ-১ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্পের আওতায় একটি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণ করা হবে(এক লক্ষ ঘনমিটার/দিন) পয়ঃপাইপ লাইন নির্মাণ করা হবে প্রায় দুইশত কিলোমিটার। ফিক্যাল স্লাজ শোধনাগার(৩০০ ঘনমিটার/দিন) একটি। অনসাইট স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ফিক্যাল স্লাজ সংগ্রহ ও পরিবহন সরঞ্জাম ক্রয় করা হবে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ২৮৮ মিলিয়ন লিটার তরল বর্জ্য নিঃসৃত হচ্ছে। যা আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন ৫১৫ মিলিয়ন লিটার হবে। এছাড়া নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ৫৩৯ ঘনমিটার ফিক্যাল স্লাজ সেপটিক ট্যাংকে জমা হচ্ছে। যা আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন প্রায় ৭১৫ ঘনমিটার হবে।
ফলে কর্ণফুলী নদী ও হালদা নদীর পানি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে অস্বাভাবিক ভাবে। পরিবেশ আশংকাজনকভাবে দূষণ হওয়ায় ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম মহানগরীতে সুপেয় পানি সরবরাহে সংকট সৃষ্টির আশংকা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকমহল।
চট্টগ্রাম ওয়াসার এই মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামের সুপেয় পানির উৎসখ্যাত ও চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণ কর্ণফুলী নদী ও হালদাসহ পুরো চট্টগ্রামের দূষণ ঠেকাতে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের খাল, নালা গুলোর পরিবেশ অনেক উন্নত হবে। চলমান নালা ও খালের দূষণ অনেক কমে যাবে। কর্ণফুলী ও হালদা নদীকে বাঁচানো গেলেই আগামী দিনে চট্টগ্রামের সুপেয় পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব অন্যতায় সুপেয় পানি সংকটে নগরীতে লোকজনের বসবাস কঠিন হয়ে পড়বে। প্রকল্পটির কাজ যথাসময়ে শুরু করে যথাসময়ে বাস্তবায়নের জন্য সকল প্রকার উদ্যোগ নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে। আন্তর্জাতিক মানের ঠিকাদারের মাধ্যমে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) মহোদয়ের আন্তরিকতায় পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা প্রকল্পসহ গত এক দশকে চট্টগ্রাম ওয়াসায় একাধিক পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন করে নগরবাসির পানির চাহিদা মেটানো হচ্ছে। নগরবাসির পানি নিয়ে অতীতে যে টেনশন ছিল, তা এখন আর নেই। একটি পরিবেশ বান্ধব শহর গড়ে তুলতে নগরবাসীসহ সকলের আরো বেশী সচেতনতার সহিত এগিয়ে আসার আহবান জানান, প্রকৌশলী মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : সেনবাগ সংবাদদাতা : নোয়াখালীর সেনবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে। &...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং মালিক, শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধার...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : # দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও জনবল সংকটে বকেয়া থাকছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব # রিটার্ন না দেওয়ার জন্য অনেকে ব্...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবিসহ দলে স্বেচ্ছাচারিতার অফিযোগে দলটির চেয়ারম্যান জি...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিরোধী দলে ছিলেন এবং বিরোধী দলেই থাকতে চান বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও রংপুর সদর-৩ আস...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। ম...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited