শিরোনাম
আমাদের বাংলা ডেস্ক : | ০৪:০৫ পিএম, ২০২৩-০২-২৮
মিজানুর রহমান চৌধুরী: আমাদের গ্রামীন জনপদে ভিলেজ পলিটিক্স নামে একটা কথা প্রচলিত আছে। যাঁরা গ্রামে বসবাস করেন, অথবা যাঁদের জন্ম গ্রামে, এখন শহরে বসবাস করছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এই শব্দগুচ্ছের সাথে পরিচিত। ভিলেজ পলিটিক্সের ফাঁদে পড়ে অনেক লোক নি:স্ব হয়েছেন এমনকি কাউকে কাউকে বাস্তুুভিটা ছেড়ে গ্রাম পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছে। এই ভিলেজ পলিটিক্সের ফাঁদে পড়ে বহু নারী প্রতিয়িনত নির্যাতিত হচ্ছেন। ভিলেজ পলিটিক্সের নেপথ্যে সাধারণত গ্রামের দুষ্টু লোকেরাই থাকেন। তাঁরা এতই চতুর যে, মারাত্মক অপরাধ করেও সবসময় তারা ধরাছোয়ার বাইরে রয়ে যায়। তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাকেই উল্টো ফাঁদে পড়তে হয়, বিপদে পড়তে হয়।যাঁরা এই ভিলেজ পলিটিক্সের নায়ক তাঁরা সবসময় সমাজের কাছে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে চায়। অনেক সময় সেই চেষ্টায় তাঁরা সফলও হয়। গ্রামের সবাই তাঁদেরকে সামনে-সামনে সম্মানের চোখে দেখে, কিন্তু প্রকৃতভাবে ভিলেজ পলিটিক্সের নায়কদেরকে কেউই সম্মানের চোখে দেখে না।
ভিলেজ পলিটিশিয়ানরা নানা ছলচাতুরি করে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি লাভ করতে চান। নিজেদের স্বার্থ লাভের জন্য তাঁরা সবকিছুই করতে পারেন। এই ভিলেজ পলিটিশিয়ানরা যদি দেখেন, গ্রামে আর কেউ তার চেয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে বা ধন-সম্পদে তার চেয়ে বেশী হয়ে যাচ্ছে, তাহলেই নানা ছলচাতুরি করে তাকে বিপদে ফেলে। তাকে যেভাবেই হোক সর্বসান্ত করার চেষ্টা করেন। গ্রামে কোন লোককে ধন-সম্পদে বা শিক্ষায়-দীক্ষায় উন্নতি করতে দেখলে, তাকে কিভাবে বিপদে ফেলে তার ধন-সম্পদ খেয়ে ফেলা যায় সেই চেষ্টা করতে থাকেন ঐ ভিলেজ পলিটিশিয়ানরা। অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা সফলও হয়।
গ্রামে আরো একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে- “চোরকে বলে চুরি কর, আর গৃহস্থকে বলে সজাগ থাকিস।” এটা ভিলেজ পলিটিশিয়ানরাই করে থাকে। গ্রামে সবসময়ই একজনের সাথে আরেকজনের দ্বন্দ বা ঝামেলা বাধিয়ে দিয়ে ভিলেজ পলিটিশিয়ানরা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেন। যেমন ধরুন: একজন চোরকে আরেকজন গৃহস্থের বাড়িতে চুরি করতে পাঠিয়ে চোরকে বলে, নিশ্চিন্তে চুরি কর, ধরা পড়লে আমি দেখব। আর গৃহস্থকে বলে, শুনেছি আজ তোমার বাড়িতে চুরি হবে, তুমি সজাগ থেকো। ঐ ভিলেজ পলিটিশিয়ান তখন উভয়ের কাছেই উপকারী লোক হিসেবে গণ্য হয়। আসলে তার উদ্দেশ্য কি ভালো? চোর যখন ধরা পড়ে, তখন চোরকে বাঁচাতে গিয়ে ঐ ভিলেজ পলিটিশিয়ান তার কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা আদায় করেন।
তেমনি করে পুরো বাংলাদেশ এখন ভিলেজ পলিটিক্সের কবলে । গ্রাম্য টাউটরা শহরের রাজনৈতিক মাফিয়া গডফাদারদের পরিকল্পনায় গ্রামীণ জনজীবনে অশান্তি সৃষ্টি করছে। এরা সরকারি দলের সহযোগিতায় নানা অপকর্ম দাপটের সাথে করে চলেছে। এরা এদের অপকর্মকে রাজনীতি মনে করে। মানুষে মানুষে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়া, পরবর্তীতে দলবদ্ধ টাউট শালিশের নামে বাদী-বিবাদী দুই পক্ষ নেয়া এবং হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে শালিশ বিক্রি করে। এসব শালিশকারকদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট দেশের সকল গ্রামাঞ্চলে শক্তিশালী অবস্থান করে গ্রামীণ জনজীবনকে বাস অযোগ্য করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার কিংবা অন্যকোন কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যথা নেই। মারাত্মক হয়ে উঠেছে থানার দালালদের তৎপরতা। এরা দক্ষভাবে পুলিশের সাথে থানার দালালীকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। অনেকে থানায় দালালীর সুযোগ সুবিধার জন্য রাজনীতি করছে। সারাদেশে গোয়েন্দা জরিপ চালালে প্রমাণিত হবে রাজনীতির সাথে জড়িত অনেক ব্যক্তির আয়ের উৎস হচ্ছে থানার দালালী এবং ঝগড়া লাগিয়ে দেয়া। আবার শালিশের নামে টাকা হাতিয়ে নেয়া। এভাবে নি:শ্ব হয়ে যাচ্ছে দেশের নিরীহ জনতা। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে। সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগে নিন। শাস্তির ব্যবস্থা করুন এসব টাউট এবং দালালদের । জনগণ, ভুক্তভোগীরা বিচারের আশায় পথ চেয়ে আছে।সমাজ বিজ্ঞানীদেরও এব্যাপারে গভীরভাবে চিন্তাভাবনার সময় এসেছে।
লেখকঃ গবেষক ও কলামিস্ট।
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : মিজানুর রহমান চৌধুরী সর্বদলীয় মাফিয়া সিন্ডিকেট প্রত্যেক সরকারের আমলে এক শ্রেণীর দূণীর্তিবাজ...বিস্তারিত
বিশেষ সম্পাদকীয় : ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ সারাবিশ্বে বর্তমানে করোনা ও ওমিক্রনের সংক্রমণ ভাইরাস আতষ্ক ...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : মিজানুর রহমান চৌধুরী : আমাদের গ্রামীন জনপদে ভিলেজ পলিটিক্স নামে একটা কথা প্রচলিত আছে। যাঁরা গ্রা...বিস্তারিত
আমাদের বাংলা ডেস্ক : : মিজানুর রহমান চৌধুরী :: হ্যা মৃত্যু অবধারিত একথা সত্য। মৃত্যু যেমন অপরিহার্য, তেমন অনিশ্চিত তার সম...বিস্তারিত
বিশেষ সম্পাদকীয় : মিজানুর রহমান চৌধুরী : খবর জানার আগ্রহ মানুষের অন্যতম আদিম প্রবৃত্তি। বছরের পর বছর জেলেরা নদীতে ম...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Bangla | Developed By Muktodhara Technology Limited